একাদশীর জ্যোৎস্নায় অস্থিরতা

1
7382
views
আহসান হাবিব 

একরাশ অস্থিরতা নিয়ে বাইরে এসে দাঁড়ালাম 
দেখলাম, একাদশীর চাঁদ ঝিরিঝিরি আলো ঢালছে 
কামিনি গাছের পাতায়; 
সে-আলোর কোমল প্রতিফলন এসে লাগছে চোখে। 
কামিনির সৌরভমাখা একটা মিহিন হাওয়া 
নাকের ভেতর ঢুকে মস্তিষ্কের নিউরোনের গভীরতায়
সরাসরি এসে আঘাত করলো। 
তখনই ভাবনার জট নড়েচড়ে উঠলো, 
মনে হলো একটি পোকা এতোদিন 
বাসা বেঁধেছিলো মাথার ভেতরে; 
তার দাম্ভিকতায় লেগেছিলো আঘাত, 
ছটফট করছিলো বাইরে বেরিয়ে আসার প্রবল ইচ্ছায়। 
ঠিক তখনই টের পেয়েছিলাম কাঁধের পেছন দিকে 
একটা কোমল হাতের স্পর্শ; 
কানে এসেছিলো— “কোথায় ছিলে এতোদিন?” 
“ও, তুমি?” 
বলেছিলাম, “নক্ষত্র চলে গেছে দূরে…” 
তুমি বলেছিলে, “ নক্ষত্র হয়ে গেছো…!” 
তারপর বলেছিলে, “কাউকে দুঃখ দিয়ে নক্ষত্র হওয়া যায়?” 
আমি বলেছিলাম, “সব দুঃখের জ্যোৎস্না হতে নেই, 
কিছু অমাবশ্যার অন্ধকারে থাকাই ভালো।” 
তুমি বলেছিলে, “দুঃখকে তো সুখের ছলনায় 
জন্মাবধি চার দেয়ালের ভেতরেই বন্দি করে রেখেছি…!” 
তারপর… না, তারপর আর হয়নি কোনো সংলাপ, 
তুমি জীবনের হিসাব না মিলিয়ে 
একাদশীচাঁদের ম্রিয়মাণ অন্ধকারে 
দুঃখের সঙ্গী হয়েই একা-একা হারিয়ে গেছো সুদূরে! 
একাদশীচাঁদের জ্যোৎস্নায় 
আমাকে আবার চেপে ধরেছে অস্থিরতা !